শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘুষের টাকাসহ আটক কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখার সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আটক সার্ভেয়ার আতিক এখন কক্সবাজার জেলা কারাগারে রয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, রোববার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো.রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১ (৩/৭/২২)। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারায় মামলাটি রুজু করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন কক্সবাজার সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এটিই প্রথম মামলা। তাই মামলাটিকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্তসহ সবকিছু করা হবে বলে জানিয়েছেন উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম।
গত শুক্রবার ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ২৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯০০ টাকাসহ সার্ভেয়ার আতিক নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে আটক হন। এরপর তাকে কক্সবাজার সদর থানায় সোপর্দ করে জেলা প্রশাসন। সরকারি কর্মচারি বিধি মতে জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আমিন আল পারভেজের একটি অভিযোগ সাধারণ ডায়রি হিসেবে নথিভুক্ত করে দুর্নীতি দমন কমিশনকে অনুলিপি পাঠানো হয়েছে। নিয়ম মতে, দুদকই সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে।
অন্যদিকে আতিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও গ্রহণ করছে উল্লেখ করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আল আমিন পারভেজ জানিয়েছেন, থানায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে তা শুরু হয়েছে। তিনি কীভাবে, কোথা থেকে এত টাকা পেলেন এবং তা ঢাকায় কেন নিয়ে গেছেন— এসব বিষয় উদঘাটন করতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দর সূত্র জানায়, আতিকুর রহমান শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে প্রবেশ করেন। তার ব্যাগ স্ক্যান করলে ব্যাগের ভেতর বিপুল পরিমাণ টাকার স্তূপ দেখা যায়। তাকে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন সদস্যরা ব্যাগসহ আটক করে বিশেষ কক্ষে বসিয়ে রাখেন। মিনিট দশেক পর পৌনে ১০ টার ইউএস বাংলার ফ্লাইটে চেপে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হন তিনি। ঘণ্টাখানেক পর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে সেখানে তল্লাশিতে ব্যাগে টাকার উপস্থিতি পাওয়া যায়। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে আটক করেন। পরে আতিকুর রহমানের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে বিকেল সাড়ে ৪টার আরেকটি ফ্লাইটে তাকে কক্সবাজারে ফেরত পাঠানো হয়।
সার্ভেয়ার আতিকুর রহমানের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায় বলে জানা গেছে। তিনি সহ ৩ জন সার্ভেয়ার মহেশখালীতে সরকারের প্রায় ১৫টি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন। ভূমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে জমির মালিকদের কাছ থেকে ঘুষ বাবদ আতিকুর রহমান ওই অর্থ ঘুষ নিয়েছেন বলে সন্দেহ করছেন সংশ্লিষ্টরা।