শনিবার মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ফলক উন্মোচন করে দেশের সবচেয়ে বড় এ সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার আগে ৭৫০ টাকা টোল দিয়ে গাড়ি নিয়ে প্রথম যাত্রী হিসেবে তিনি পদ্মা সেতু এলাকায় প্রবেশ করেন।
সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সকালে হেলিকপ্টারে করে মাওয়ায় পৌঁছান। সেতুর সার্ভিস এরিয়ায় সাড়ে তিন হাজার অতিথির উপস্থিতিতে তিনি সুধী সমাবেশে অংশ নেন এবং স্মারক টিকেট ও স্মারক নোট উন্মোচন করেন।
এরপর বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে তার গাড়ি সেতুর টোল প্লাজার দিকে এগিয়ে যায়। দু মিনিট পর প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর টোল প্লাজায় পৌঁছায়।
গাড়ি থেকে হাত বাড়িয়ে টোলের টাকা দেন প্রধানমন্ত্রী। বহরে থাকা বাকি গাড়িগুলোর টোলও তিনিই পরিশোধ করেছেন বলে জানান টোল প্লাজায় দায়িত্বরত কর্মী তানিয়া আফরিন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার নিজের গাড়ি এবং বহরের সব গাড়ি মিলিয়ে মোট ১৬ হাজার ৪০০ টাকা টোল দিয়েছেন।
টোল প্লাজায় একজন নারী ইনচার্জকে দায়িত্বে দেখে প্রধানমন্ত্রী খুব খুশি হয়েছেন জানিয়ে তানিয়া বলেন, “তিনি আমার নাম জানতে চেয়েছেন, আমার কেমন লাগছে জানতে চেয়েছেন। আমি আমার অনুভূতি ব্যক্ত করেছি, বলছি খুব ভালো লেগেছে। প্রধানমন্ত্রীকে সরাসরি দেখতে পেয়ে আমার স্বপ্নও পূরণ হল।”
টোল দিয়ে বেলা ১১টা ৪৯ মিনিটে পদ্মা সেতুর দিকে এগিয়ে যায় প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর। সেতুতে ওঠার আগে বেলা ১১টা ৫৮ মিনিটে পদ্মা সেতুর ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাতাসে রঙিন আবির উড়িয়ে বর্ণিল পরিবেশে উদ্বোধন হয় বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মা সেতুর।
ফলক উম্মোচনের পর মোনজাত পরিচালনা করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক সিদ্দিকীও উপস্থিত ছিলেন এ সময়।
২০১২ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় পদ ছাড়তে বাধ্য হওয়া যোগাযোগ মন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন এবং তখনকার যোগাযোগ সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়াও উপস্থিত ছিলেন এ সময়। পরে সেই অভিযোগের কোনো প্রমাণ আর মেলেনি।
উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর সেতুতে ওঠে বেলা ১২টা ৭মিনিট। কিছুক্ষণ পর বহরের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গাড়ি থেকে নেমে সেতুতে দাঁড়ান শেখ হাসিনা। সেখানে প্রায় ১৫ মিনিট সময় কাটান তিনি।
বিমান বাহিনীর কয়েকটি হেলিকপ্টার সে সময় পতাকা উড়িয়ে প্রদর্শনীতে অংশ নেয় সেতুর ওপরে আকাশে। বিমান থেকে ছড়ানো লাল, সবুজ, নীলসহ নানা রঙের ধোঁয়া।
সেতুতে দাঁড়িয়ে মিগ-২৯ জঙ্গি বিমানের একটি প্রদর্শনীও উপভোগ করেন সরকার প্রধান। উৎসবের এ মুহূর্তগুলোকে ক্যামেরায় ধারণ করতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীও সেতুর ওপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন এ সময়।
ধীর গতিতে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘের সেতু পাড়ি দিয়ে ১২টা ৩৪ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী পৌঁছান শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে। সেখানে সেতুর আরেকটি ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী, পরে যোগ দেন মাদারীপুরের শিবচরে আওয়ামী লীগের বিশাল সমাবেশে