রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নতুন অডিটারিয়ামে সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার সময় উপজেলা আইন -শৃংখলা, সন্ত্রাস ও নাশকতা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য প্রদান করেন উপজেলা ভাইস চেরারম্যান আব্দুল মালেক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সুফিয়া খাতুন, রাজশাহী জেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধার সাবেক কমান্ডার মোঃ শাহাদুল হক, মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোঃ হায়দার আলী, সাংবাদিক, কাউন্সলর শহিদুল ইসলাম, দেওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বেলাল উদ্দিন সোহেল, রিশিকুল ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু, গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমানসহ শিক্ষ প্রতিষ্ঠানের প্রধান, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিকগণ আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ জানে আলম সভার শুরুতে বলেন, গোদাগাড়ী মডেল থানার শ্রেষ্ঠ থানা হয়েছে। এট আমাদোর জন্য খুশির খবর, পাশাপাশি হেরোইন সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, সবাইকে এ ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে।
গোদাগাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের আলিপুর জামে মসজিদের খতিব ( ইমাম) মাও. মোঃ জাকির হোসেনকে ৩১০ গ্রাম হেরোইনসহ র্যাব গ্রেফতার করেছেন। দেশ, সমাজের জন্য লজ্জা।
সামনে ঈদুল আযহা যে সমস্ত পশু পাবনা, ঢাকা, চিটাগাং, সিলেট যাবে কোন ভাবে যেন হয়রানির স্বীকার যেন না হয় সে দিকে সুদৃষ্টি থাকবে। মাদক ব্যবসাসীরা যতই শক্তিশালী হউক না কেন তাদের কোনভাবে ছাড় দেয়া হবে না। মাদকের সাথে কামলা ধরা পড়ে, মালিক ধরা পড়ে না, এরা আড়ালে থেকে যায়। কোন জনপ্রতিনিধি যদি মাদক ব্যবসার সাথে যুক্ত থাকে, আর যদি মাদকসহ ধরা পড়েন সে যতই শক্তিশালী হউক না কেন কেউ ছাড় পাবে না।
অন্যান্য বক্তাগণ বলেন, জেলার মাসিক সভায় গোদাগাড়ী মাদক নিয়ে ব্যাপক বাজেভাবে আলোচনা হয়েছে। মাদক গোদাগাড়ীর উপজেলা বাসীর জন্য লজ্জা এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। গোদাগাড়ীতে দিন দিন মাদক ব্যবসায়ী, মাদক সেবীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যততত্র মাদক পাওয়া যাচ্ছে ফলে ধরে নেয়া হয় এলাকার কিছু অসৎ জনপ্রতিনিধি এ মাদক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত বলে খারাপভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
অন্যান্য বক্তরা বলেন, গোদাগাড়ীর অনেক অর্জন আছে, কিন্ত মাদকের কারনে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এতা হতে দেয়া যায় না। মাদক ব্যবসায়ীরা খুবই শক্তিশালি, কিন্তু প্রধান মন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসারণ করেছেন। তারা বলেন, মাদক পুলিশ, বিজিপি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সদস্যদের দুর্বল অভিযোগের কারণে মাদক ব্যবসা করে বীর দাপটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। যারা একসময় ঢাকা যাত্রীবাহী বাসের হেলপার, কুলি, সাইকেল মেকার, শ্রমিক, কামলা ভ্যানচালক, অটোচালক ছিল, তাদের বৈধ কোন ব্যবসা নেই, ইনকাম না থাকলেও কোটি কোটি টাকার কালো সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন।, ঢাকা, রাজশাহী শহরে রাজকীয় বাড়ী, গাড়ি, কোটি কোটি টাকার ব্যাংক ব্যালেন্স করেছেন, নতুন জনপ্রতিনিধি হযেও বহুবিয়ে করেছেন তার পরেও রাজশাহীর একটি প্লাজায় নারী নিয়ে ফুর্তি করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তারা আবার বড় বড় কথা বলার অপচেষ্ট করে। মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা অপডেড করা প্রয়োজন। অনেকে মৃত্য্যু বরন করলেও এ তালিকায় তাদের নাম রয়েছে। অনেকে মাদক ব্যবসা করে শূণ্য থেকে স্বপ্ল সময়ে কোটিপটি হলেও তাদের নাম নেই মাদক তালিকায়। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।
পুলিশ, বিজিপি, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন বাহনীর নিকট মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে না কেন? তাদের গ্রেফতার করা হলে তারা পার পেয়ে যায় কেন? প্রধান মন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষনা করেছেন। এতে
আপনারা জনগনের উপর দোষ দিয়ে আপনার দায়িত্ব এড়িয়ে যাবে না। সীমান্ত এলাকায় কাঁটা তারের বেড়া থাকা শর্তেও হেরোইন, ফেনসিডিল, মদ সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য আসে কি করে। আপনারা আরও আন্তরিক হলে কোন মাদকদ্রব্য দেশে আসবে না। মাদক বন্ধ করা পুলিশের কাজ নয়। সামাজিক প্রতিরোধ করে গড়ে তোলা হলে মাদক অনেক অংশে কমে আসবে। ক্রিকেট জুয়াড়ি, বাল্যবিয়ে, মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসিকে আহ্বান জানান।
এলাকায় হেরোইন, ইয়াবা, মাদক ইদানিং ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে, মহিশালবাড়ী, মাদারপুর, রাজাবাড়ী, বসন্তপুর, পিরিজপুর, বিদিরপুর। গোপালপুর মিষ্টির দোকান, বিদিরপুর ক্লাবে মাদকের হাট বসে, বিদিরপুর ক্যাম্পে মিনি চেকপোষ্ট বসিয়ে বিজিপি মাদক ধরতে পারবেন না কারন মাদক আসে সীমান্ত দিয়ে, বিজিপি সজাগ থাকলে ৯০ ভাগ মাদক আসা বন্ধ হয়ে যাবে। মাদক ব্যবসা কমে যাবে।