আত্মগোপনে চলে যাওয়া সুমন নামের ছেলেটির এখন বয়স ৩০। মাঝে কেটে গেছে দীর্ঘ বারোটি বছর। কাজ করতেন মিরপুরের একটি প্যাকেজিং গার্মেন্টসে।
২০১০ সালের ৩১ আগস্ট পল্লবীর বাসা থেকে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে কয়েকজনকে তাস খেলতে দেখতে পান। জুয়ার আসরে যোগ দেন সুমনও। জুয়ায় ১০০ টাকা হেরে গেলে টাকা না থাকায় জুয়াড়িরা তার একমাত্র সম্বল মোবাইল ফোনটি রেখে দেন।
মোবাইল ফোনটি হারিয়ে পরিবারে জবাবদিহির ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গুলিস্তান চলে যায় সে। বিভিন্ন সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াতে থাকে সুমন।
সুমন বলেন, ‘ভাইয়া তার ছাত্রদের প্রাইভেট পড়াইতো। তখন আমি ভাইয়ার ছাত্র সেজে পরিচয় গোপন করে আমার আব্বুকে একটা ফোন দিয়েছিলাম।
এদিকে পিকআপ চালক বাবা ছেলেকে হারিয়ে পল্লবী থানায় মামলা করলে মামলার তদন্তের দায়িত্ব আসে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। পুলিশ মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করতে পারলেও সুমনের কোনো হদিস করতে পারেনি।
সুমনের বাবা মোজাফফর মিয়া বলেন, ‘আমি এই সিম বন্ধ করি নাই। তার কারণ, আমার ছেলের এ নাম্বার মুখস্ত। সে যে কোনো সময় এ নাম্বারে ফোন দিতে পারে।’
২০১৯ সালে মামলাটির তদন্ত আসে পিবিআই’র কাছে। অবশেষে প্রায় ৩ বছরের চেষ্টায় সফল হয় সংস্থাটি। সোমবার (২৩ মে) রাজধানীর মদিনাবাগ এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
ঢাকা মহানগর পিবিআই’র বিশেষ পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোর্টে রিপোর্ট পাঠানোর দুই মাস পর আমরা এই ভিকটিমের সন্ধান পাই। সন্ধান পাওয়ার সূত্র ধরে আমরা ভিকটিমকে উদ্ধার করে আদালত থেকে মামলাটি আবার পুনরায় তদন্তের জন্য নিয়ে আসি।
গত ১২ বছরে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পেশায় জড়িত সুমন বর্তমানে রিকশা চালান।