ঢাকা ০৯:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোজার দুমাস আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের

রোজার আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের

রমজান আসতে বাকি আরও দুমাস। এর মধ্যেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। বেড়ে গেছে চাল, ছোলা, ডাল, বেসন, মাছ, মাংস ও খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। এখনই এ অবস্থা হলে, রোজার সময় সব নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এসব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে নতুন সরকারকে।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর, রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র।

বিক্রেতারা জানান, রোজার আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের। মূলত আড়তদার ও মিল মালিকদের কারসাজিতে বাড়ছে দাম। আর ক্রেতাদের মতে, সিন্ডিকেট করে রোজার আগেই বাজার অস্থির করে তুলেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

পলাশ হোসাইন নামে এক ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি এখনও দুমাস। অথচ এখনই অস্থির হয়ে ওঠেছে বাজার। বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে রোজার সময় সব পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে।

প্রত্যয় নামে আরেক ক্রেতা বলেন, নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, নতুন বছরে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সরকার চাইলে রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে পারে। এজন্য দরকার কেবল কঠোর নজরদারি।

সাইফুল নামে কারওয়ান বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, আড়তদার ও মিল মালিকরা সিন্ডকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন। বাড়তি দামে পণ্য কেনায়, বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে গরিব মানুষের কিছুটা কষ্ট হলেও, খুচরা ব্যবসায়ীরা নিরুপায়।

দাম বেড়েছে ডাল-ছোলা ও আটা-ময়দার

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আাটা-ময়দা, ডাল-ছোলা ও বেসনের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে এসব পণ্য ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। খোলা আটা ৫০ টাকা ও প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের খুচরা দোকানদার সালাম বলেন, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আটা-ময়দার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। তাই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই।

এদিকে, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, আর মসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ছোলা ৯৫ টাকা ও ছোলার ডাল ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাঙ্কর ও খেসারির ডাল বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭০ টাকা এবং ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

ডালের দাম বাড়ায় বেড়েছে বেসনের দামও। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর আমদানি শুল্ক অর্ধেক কমানোর পরও বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও।

বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে চিনি পাওয়াই যাচ্ছে না। শুল্ক কমিয়ে লাভ নেই। পাইকারি পর্যায়ে দাম না কমলে খুচরা পর্যায়েও দাম কমবে না।

আরও বেড়েছে চালের দাম

সপ্তাহ ব্যবধানে আবারও বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুসপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মোটা ও সরু চালের দাম। প্রতি কেজি আটাইশ ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭৮ থেকে ৮৪ টাকা, পাইজাম ৫২ থেকে ৫৩ টাকা ও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির আল হাসিব বলেন, চালের দাম কমার বদলে বাড়ছে। দেশে চালের কোনো সংকট নেই। মিলারদের সিন্ডিকেটের কারণেই দাম বাড়ছে। তারা নির্বাচনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।

ঊর্ধ্বমুখী মাংসের বাজার

সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম। প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি ও লাল লেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। আর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। আর প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা কিছুটা ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগির। তবে শীত বাড়লে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের রিপন বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মুরগির রোগ-বালাই। মারা যাচ্ছে মুরগির বাচ্চা। শীত আরও তীব্র হলে সরবরাহ সংকট তৈরি হতে পারে। এতে আরও বাড়বে দাম।

এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে গত মাসে গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা বেঁধে দিয়েছিল মাংস ব্যবসায়ীরা। তবে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাজারে কেন বাড়তি দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে। তাই দাম বাড়ানো হয়েছে।

কেরানীগঞ্জের মায়ের দোয়া গোস্ত বিতানের মাংস ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম বলেন, দাম কমানোয় গরুর মাংসের বিক্রি বেড়েছিল, কিন্তু কম দামের কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে। এ কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নির্ধারিত দাম থেকে ৩০ টাকা বাড়িয়ে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে বাজারে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

অস্থির বাজারে নতুন করে বাড়েনি ডিমের দামও। প্রতি ডজন লাল ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম কমেছে সবজির

অস্থির বাজারে একমাত্র স্বস্তি মিলছে সবজিতে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকার বাড়ার পর চলতি সপ্তাহে কমেছে মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে।

কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জল বলেন, শীত বাড়ায় বেড়েছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। এতে কমেছে দাম। শীত বাড়লে শাক-সবজির দাম আরও কমবে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমলেও তা খুবই নগন্য। এসময় সবজির দাম ৪০ টাকা নিচে থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। নাবিল নামে এক ক্রেতা বলেন, পণ্যের দাম ৫ টাকা বাড়লে, কমে ১ টাকা। যা খুবই সামান্য। সবজির দাম আরও কমলে বাজারে স্বস্তি ফিরবে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পুরান আলু ৭০ টাকা, নতুন আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, কহি ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আকারভেদে ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়; আর পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চড়া মাছের বাজার

সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ক্রেতার ঘাম ঝরাচ্ছে মাছের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে সামান্য বাড়লেও তা সাধ্যের বাইরে বলছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতাদের দাবি, পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ না পাওয়া যাওয়ায় দাম কমছে না।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হরিপদ বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ না পাওয়ায় দাম বাড়ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।

আর ক্রেতাদের দাবি, দিন দিন মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই লাগাম টেনে না ধরলে মাছ কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়াবে।

আকাশ নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে মাছের দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে নদীর মাছের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে।

স্থিতিশীল পেঁয়াজ, দাম বেড়ে গেছে আদা-রসুনের

অস্থির পেঁয়াজের বাজারে মিলেছে কিছুটা স্বস্তি। নতুন করে বাড়েনি দাম। প্রতি কেজি পুরাতন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে বাজারে দেখা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর প্রতিকেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পুরোদমে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠায় নতুন করে দাম বাড়েনি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা হাসিব বলেন, সরবরাহ বাড়ায় দাম বাড়েনি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করলে দাম শিগশিরিই কমে আসবে।

এদিকে, কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়।

এ,ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে আদা-রসুনের।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১১ জানুয়ারির হালনাগাদকৃত তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দেশি ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৯২ শতাংশ ও ৭৭.৭৮ শতাংশ। আর দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ১৪০ শতাংশ ও ১৪৭.৬ শতাংশ।

এদিকে, ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে খেজুরের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিকেজি দাবাস খেজুর ৪৪০ টাকা, জাহিদি খেজুর ২৪০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৮৫০ টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ২৮০ টাকা, নাশপতি ২৫০ টাকা, আনার ৫০০ টাকা, লাল আঙুর ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা ও কমলা ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের এ অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।

আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

বান্দরবানকে স্মার্ট পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে: ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।

রোজার দুমাস আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের

আপডেট সময় ০৬:৩১:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৪

রমজান আসতে বাকি আরও দুমাস। এর মধ্যেই অস্থির নিত্যপণ্যের বাজার। বেড়ে গেছে চাল, ছোলা, ডাল, বেসন, মাছ, মাংস ও খেজুরসহ কয়েকটি পণ্যের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন ভোক্তারা। এখনই এ অবস্থা হলে, রোজার সময় সব নাগালের বাইরে চলে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এসব নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে জোর দিতে হবে নতুন সরকারকে।

শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) কেরানীগঞ্জের জিনজিরা ও আগানগর, রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও হাতিরপুল বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে একই চিত্র।

বিক্রেতারা জানান, রোজার আগেই দাম বেড়েছে প্রায় সব ধরনের নিত্যপণ্যের। মূলত আড়তদার ও মিল মালিকদের কারসাজিতে বাড়ছে দাম। আর ক্রেতাদের মতে, সিন্ডিকেট করে রোজার আগেই বাজার অস্থির করে তুলেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা।

পলাশ হোসাইন নামে এক ক্রেতা বলেন, রোজার বাকি এখনও দুমাস। অথচ এখনই অস্থির হয়ে ওঠেছে বাজার। বিদ্যমান সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে রোজার সময় সব পণ্যের দাম নাগালের বাইরে চলে যাবে।

প্রত্যয় নামে আরেক ক্রেতা বলেন, নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশা থাকবে, নতুন বছরে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে থাকবে। সরকার চাইলে রোজার সময় নিত্যপণ্যের দাম নাগালে রাখতে পারে। এজন্য দরকার কেবল কঠোর নজরদারি।

সাইফুল নামে কারওয়ান বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, আড়তদার ও মিল মালিকরা সিন্ডকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন। বাড়তি দামে পণ্য কেনায়, বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে গরিব মানুষের কিছুটা কষ্ট হলেও, খুচরা ব্যবসায়ীরা নিরুপায়।

দাম বেড়েছে ডাল-ছোলা ও আটা-ময়দার

বাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহ ব্যবধানে আাটা-ময়দা, ডাল-ছোলা ও বেসনের দাম বেড়েছে। প্রতি কেজিতে এসব পণ্য ৩ থেকে ৫ টাকা বেড়েছে। খোলা আটা ৫০ টাকা ও প্যাকেটজাত আটা বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে। আর কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে খোলা ময়দা ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং প্যাকেটজাত ময়দা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের খুচরা দোকানদার সালাম বলেন, ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আটা-ময়দার দাম ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেড়েছে। তাই দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা ছাড়া উপায় নেই।

এদিকে, কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, আর মসুরির ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। এছাড়া কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ছোলা ৯৫ টাকা ও ছোলার ডাল ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়। আর কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে অ্যাঙ্কর ও খেসারির ডাল বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৭০ টাকা এবং ৯০ থেকে ১০০ টাকায়।

ডালের দাম বাড়ায় বেড়েছে বেসনের দামও। কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি বেসন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। আর আমদানি শুল্ক অর্ধেক কমানোর পরও বাজারে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চিনি। প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়। আর প্যাকেটজাত চিনি তো বাজার থেকেই উধাও।

বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে চিনি পাওয়াই যাচ্ছে না। শুল্ক কমিয়ে লাভ নেই। পাইকারি পর্যায়ে দাম না কমলে খুচরা পর্যায়েও দাম কমবে না।

আরও বেড়েছে চালের দাম

সপ্তাহ ব্যবধানে আবারও বেড়েছে চালের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দুসপ্তাহে কেজিতে ৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে মোটা ও সরু চালের দাম। প্রতি কেজি আটাইশ ৫২ থেকে ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল ৭৮ থেকে ৮৪ টাকা, পাইজাম ৫২ থেকে ৫৩ টাকা ও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের বরিশাল রাইছ এজেন্সির আল হাসিব বলেন, চালের দাম কমার বদলে বাড়ছে। দেশে চালের কোনো সংকট নেই। মিলারদের সিন্ডিকেটের কারণেই দাম বাড়ছে। তারা নির্বাচনের সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে।

ঊর্ধ্বমুখী মাংসের বাজার

সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়ে গেছে গরু ও মুরগির মাংসের দাম। প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি ও লাল লেয়ারের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ২০ টাকা। আর গরুর মাংসের দাম বেড়েছে ৩০ থেকে ৫০ টাকা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা, দেশি মুরগি ৫০০ থেকে ৫৮০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। আর প্রতি কেজি হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা কিছুটা ব্রয়লার ও লাল লেয়ার মুরগির। তবে শীত বাড়লে দাম আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের রিপন বলেন, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মুরগির রোগ-বালাই। মারা যাচ্ছে মুরগির বাচ্চা। শীত আরও তীব্র হলে সরবরাহ সংকট তৈরি হতে পারে। এতে আরও বাড়বে দাম।

এদিকে, বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৬৮০ থেকে ৭০০ টাকায়। তবে গত মাসে গরুর মাংসের দাম ৬৫০ টাকা বেঁধে দিয়েছিল মাংস ব্যবসায়ীরা। তবে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বাজারে কেন বাড়তি দামে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা বলেন, কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে। তাই দাম বাড়ানো হয়েছে।

কেরানীগঞ্জের মায়ের দোয়া গোস্ত বিতানের মাংস ব্যবসায়ী ফরিদুল ইসলাম বলেন, দাম কমানোয় গরুর মাংসের বিক্রি বেড়েছিল, কিন্তু কম দামের কারণে লোকসান গুণতে হয়েছে। এ কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নির্ধারিত দাম থেকে ৩০ টাকা বাড়িয়ে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে।

তবে বাজারে বাড়েনি খাসির মাংসের দাম। বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়।

অস্থির বাজারে নতুন করে বাড়েনি ডিমের দামও। প্রতি ডজন লাল ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায় ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২০০ থেকে ২১০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম ২৩৫ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম কমেছে সবজির

অস্থির বাজারে একমাত্র স্বস্তি মিলছে সবজিতে। তবে গত কয়েক সপ্তাহে কেজিতে ২০ থেকে ৪০ টাকার বাড়ার পর চলতি সপ্তাহে কমেছে মাত্র ৫ থেকে ১০ টাকা। বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির সরবরাহ বাড়ায় দাম কমেছে।

কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজারের সবজি বিক্রেতা উজ্জল বলেন, শীত বাড়ায় বেড়েছে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। এতে কমেছে দাম। শীত বাড়লে শাক-সবজির দাম আরও কমবে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমলেও তা খুবই নগন্য। এসময় সবজির দাম ৪০ টাকা নিচে থাকার কথা থাকলেও বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। নাবিল নামে এক ক্রেতা বলেন, পণ্যের দাম ৫ টাকা বাড়লে, কমে ১ টাকা। যা খুবই সামান্য। সবজির দাম আরও কমলে বাজারে স্বস্তি ফিরবে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ২৫ থেকে ৩০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৮০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা, শসা ৩০ টাকা, লতি ৮০ টাকা, শিম ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও গাজর ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি বেগুন জাতভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পটোল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, পুরান আলু ৭০ টাকা, নতুন আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, কহি ৫০ টাকা, কাঁচা টমেটো ২০ টাকা ও পেঁয়াজের কলি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর প্রতি পিস লাউ ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আকারভেদে ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ থেকে ৪০ টাকা ও ব্রকলি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়ে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়; আর পাইকারি পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়।

এ ছাড়া বাজারে লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পুঁইশাক ২৫ টাকা, পালংশাক ১০ টাকা ও লাউ শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চড়া মাছের বাজার

সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ক্রেতার ঘাম ঝরাচ্ছে মাছের দাম। সপ্তাহ ব্যবধানে কেজিতে সামান্য বাড়লেও তা সাধ্যের বাইরে বলছেন ক্রেতারা। আর বিক্রেতাদের দাবি, পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ না পাওয়া যাওয়ায় দাম কমছে না।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, আকারভেদে প্রতি কেজি রুই ৩৮০ থেকে ৪৫০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৪৮০ টাকা, চাষের শিং ৫৫০ টাকা, চাষের মাগুর ৫০০ টাকা, চাষের কৈ ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, কোরাল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকা, টেংরা ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা, চাষের পাঙাশ ২০০ থেকে ২২০ টাকা ও তেলাপিয়া ২১০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া প্রতি কেজি বোয়াল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, আইড় ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা, বাইম ১ হাজার টাকা, দেশি কৈ ১ হাজার ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা, শিং ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, শোল ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা ও নদীর পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়।

কেরানীগঞ্জের কালীগঞ্জ বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হরিপদ বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ না পাওয়ায় দাম বাড়ছে। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে।

আর ক্রেতাদের দাবি, দিন দিন মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখনই লাগাম টেনে না ধরলে মাছ কেনা কষ্টসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়াবে।

আকাশ নামে এক ক্রেতা জানান, বাজারে মাছের দাম অনেক বেশি। বিশেষ করে নদীর মাছের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হবে।

স্থিতিশীল পেঁয়াজ, দাম বেড়ে গেছে আদা-রসুনের

অস্থির পেঁয়াজের বাজারে মিলেছে কিছুটা স্বস্তি। নতুন করে বাড়েনি দাম। প্রতি কেজি পুরাতন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। তবে বাজারে দেখা নেই ভারতীয় পেঁয়াজের। দু-একটি দোকানে পাওয়া গেলেও সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। আর প্রতিকেজি মুড়িকাটা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে পুরোদমে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উঠায় নতুন করে দাম বাড়েনি। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা হাসিব বলেন, সরবরাহ বাড়ায় দাম বাড়েনি। কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি না করলে দাম শিগশিরিই কমে আসবে।

এদিকে, কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৭০ থেকে ২৮০ টাকায় এবং আমদানি করা রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। আর আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়।

এ,ছাড়া কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরবরাহ কমায় দাম বাড়ছে আদা-রসুনের।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১১ জানুয়ারির হালনাগাদকৃত তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দেশি ও আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ৯২ শতাংশ ও ৭৭.৭৮ শতাংশ। আর দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে যথাক্রমে ১৪০ শতাংশ ও ১৪৭.৬ শতাংশ।

এদিকে, ফলের বাজার ঘুরে দেখা যায়, মানভেদে খেজুরের দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। প্রতিকেজি দাবাস খেজুর ৪৪০ টাকা, জাহিদি খেজুর ২৪০ টাকা, বড়ই খেজুর ৪০০ টাকা, মরিয়ম খেজুর ৮৫০ টাকা ও মেডজুল খেজুর বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩০০ টাকা।

এছাড়া প্রতি কেজি মাল্টা ৩০০ টাকা, সবুজ আপেল ২৮০ টাকা, নাশপতি ২৫০ টাকা, আনার ৫০০ টাকা, লাল আঙুর ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা ও কমলা ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নিত্যপণ্যের এ অস্থির বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বাজার মনিটরিংয়ের দাবি ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়েরই। ক্রেতারা বলছেন, নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হয় না। এতে বিক্রেতারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ানোর সুযোগ পায়।

আর বিক্রেতারা বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। বাজারে নিয়মিত অভিযান চালালে অসাধুদের দৌরাত্ম্য কমবে।