ঢাকা ০৬:৪২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কালের আবর্তনে প্রতিমা তৈরিতে এসেছে ভিন্নতা, বদলে গেছে  উৎসবের ধরন

বাঙালি হিন্দুর বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো দুর্গাপূজা

বাঙালি হিন্দুর বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীরা গোটা বছর এই পুজোর আশা করে বসে থাকেন। দুর্গাপূজার পাঁচ দিন আগে হয় মহালয়া। মহালয়ার পর থেকে শুরু হয় দেবী পক্ষের প্রতিপদ তিথি।
তারপর ষষ্টি থেকে দশমী পর্যন্ত হয় মায়ের পুজো। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় বাঙালীর বড় উৎসব দুর্গাপূজা। তবে কালের বিবর্তনে বদলে গেছে এ উৎসবের ধরন ও ধারন। প্রতিমা তৈরিতে এসেছে নানা রকম ভিন্নতা।
এর ফলে
কমে এসেছে মানুষের মধ্যে পূজার আমেজ। আর নেই সেই পুরোনো দিনের পুজো। এখনকার পূজা মন্ডপ গুলোতে ঘুরতে আসলে দেখা যায় না পুরোনো দিনের আনন্দ আমেজ।
আগে পূজায় মন্ডপ গুলো তৈরি হতো ধর্মীয় সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে মন্ডপ গুলো তৈরি করা হয় নিজের ইচ্ছা মতো। এছাড়াও পূজোয় ঢাক-বাজনার বদলে চলে নানান ধরনের ডিজে গান-বাজনা। যা পূজোর পরিবেশ কে নষ্ঠ করে দেয়।
রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো শহর জুড়ে চলছে মন্ডপ তৈরির প্রতিযোগিতা।একটা সময় ছিলো সনাতন ধর্মীয়অবলম্বীরা ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের মানুষ পূজায় আনন্দে মিলিত হতো। মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে কুশল বিনিময় করে নিজেদের মধ্যে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতো। বন্ধু-বান্ধবদের দেওয়া হতো পূজার দাওয়াত।
পূজোয় বাসায় এসে নারিকেলর লাড্ডুসহ অন্যান্য শুকনা খাবার খেয়ে বেশ মজা করতো। পূজার শেষ দিন মেলায় সবাই মিলে নাচে গেয়ে মেতে ওঠা ও সিঁদুর খেলা করে আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যেতো। এখন আর এই দৃশ্য গুলো চেখে পড়ে না।
তবে এতো কিছুর মধ্যেও রয়ে গেছে পূজোর সেই অনুভূতিটা। পূজো আসছে আসছে করে সনাতন ধর্মীয় বাড়ী গুলোতে পূজা পার্বণ উপলক্ষে মা-বড়মাদের হাতের তৈরী করা চিড়ে, মুড়ি, নারকেল ও গুড়ের নাড়ু।
বর্তমান সময়ে লক্ষ করা যায়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান তেমন ভাবে পালন না করে প্রতিমার সামনে ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করতে ব্যস্ত সকলে। আগে বাচ্চার এলাকার পূজো গুলোতে অংশ গ্রহণ করতো। পূজোর কাজ কর্মে হাত লাগাতো। যেটা বর্তমান সময়ের বাচ্চারা করেনা।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমালিকা বলেন, আগের পূজো মন্ডপে গেলে বেশ আনন্দ হতো। গান-বাজনার তালে তালে আর অতিথিদের পদচারনায় মুখরিত হতো। বর্তমানে সকলেই কর্ম ব্যস্ততা থাকায় সেই ভাবে মন্ডপে ঘুরতে আসতে দেখা যায় না। এছাড়ও বর্তমানে ধর্মীয় বিষয় গুলো তেমন ভাবে মানতে দেখা যায় না।
পূজাচারি পুলক ঠাকুর বলেন, পূর্বে পূজার মন্ডপ তৈরী হতো শহর জুড়ে হাতে গোনা কয়েকটা। পুরো শহরের মানুষ সেখানে গিয়ে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে বেশ আনন্দ করতো। এখন এক এলাকায় অনেকগুলো মন্ডপ হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে। ফলে আগের সেই চিরচেনা আনন্দ উৎসব লক্ষ্য করা যায় না।
এছাড়াও পূজোর কাজকর্মে এখন কাউকে অংশ গ্রহণ করতে দেখা যায়না। এসব বিষয় গুলোর উপরে যদি পারিবারিক শিক্ষা দেওয়া হয়। তাহলে একদিকে যেমন ধর্মীয় উৎসব গুলো ভালো ভাবে পালন হবে, অন্যদিকে উৎসবমূখর পরিবেশ তৈরী হবে। যা সকলকে ধর্মমূখি হতে সাহায্য করবে।
আপলোডকারীর তথ্য

Daily Naba Bani

মিডিয়া তালিকাভুক্ত জাতীয় দৈনিক নববাণী পত্রিকার জন্য সকল জেলা উপজেলায় সংবাদ কর্মী আবশ্যকঃ- আগ্রহীরা আজই আবেদন করুন। মেইল: [email protected]
জনপ্রিয় সংবাদ

বান্দরবানকে স্মার্ট পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে: ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ।

কালের আবর্তনে প্রতিমা তৈরিতে এসেছে ভিন্নতা, বদলে গেছে  উৎসবের ধরন

আপডেট সময় ০৫:৪৮:১৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৩
বাঙালি হিন্দুর বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলো দুর্গাপূজা। সনাতন ধর্মালম্বীরা গোটা বছর এই পুজোর আশা করে বসে থাকেন। দুর্গাপূজার পাঁচ দিন আগে হয় মহালয়া। মহালয়ার পর থেকে শুরু হয় দেবী পক্ষের প্রতিপদ তিথি।
তারপর ষষ্টি থেকে দশমী পর্যন্ত হয় মায়ের পুজো। এর মধ্যে দিয়ে শেষ হয় বাঙালীর বড় উৎসব দুর্গাপূজা। তবে কালের বিবর্তনে বদলে গেছে এ উৎসবের ধরন ও ধারন। প্রতিমা তৈরিতে এসেছে নানা রকম ভিন্নতা।
এর ফলে
কমে এসেছে মানুষের মধ্যে পূজার আমেজ। আর নেই সেই পুরোনো দিনের পুজো। এখনকার পূজা মন্ডপ গুলোতে ঘুরতে আসলে দেখা যায় না পুরোনো দিনের আনন্দ আমেজ।
আগে পূজায় মন্ডপ গুলো তৈরি হতো ধর্মীয় সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে। বর্তমানে মন্ডপ গুলো তৈরি করা হয় নিজের ইচ্ছা মতো। এছাড়াও পূজোয় ঢাক-বাজনার বদলে চলে নানান ধরনের ডিজে গান-বাজনা। যা পূজোর পরিবেশ কে নষ্ঠ করে দেয়।
রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরো শহর জুড়ে চলছে মন্ডপ তৈরির প্রতিযোগিতা।একটা সময় ছিলো সনাতন ধর্মীয়অবলম্বীরা ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের মানুষ পূজায় আনন্দে মিলিত হতো। মন্ডপে মন্ডপে ঘুরে কুশল বিনিময় করে নিজেদের মধ্যে সু-সম্পর্ক বজায় রাখতো। বন্ধু-বান্ধবদের দেওয়া হতো পূজার দাওয়াত।
পূজোয় বাসায় এসে নারিকেলর লাড্ডুসহ অন্যান্য শুকনা খাবার খেয়ে বেশ মজা করতো। পূজার শেষ দিন মেলায় সবাই মিলে নাচে গেয়ে মেতে ওঠা ও সিঁদুর খেলা করে আনন্দের মাত্রা বহুগুণ বেড়ে যেতো। এখন আর এই দৃশ্য গুলো চেখে পড়ে না।
তবে এতো কিছুর মধ্যেও রয়ে গেছে পূজোর সেই অনুভূতিটা। পূজো আসছে আসছে করে সনাতন ধর্মীয় বাড়ী গুলোতে পূজা পার্বণ উপলক্ষে মা-বড়মাদের হাতের তৈরী করা চিড়ে, মুড়ি, নারকেল ও গুড়ের নাড়ু।
বর্তমান সময়ে লক্ষ করা যায়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান তেমন ভাবে পালন না করে প্রতিমার সামনে ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করতে ব্যস্ত সকলে। আগে বাচ্চার এলাকার পূজো গুলোতে অংশ গ্রহণ করতো। পূজোর কাজ কর্মে হাত লাগাতো। যেটা বর্তমান সময়ের বাচ্চারা করেনা।
এ বিষয়ে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তমালিকা বলেন, আগের পূজো মন্ডপে গেলে বেশ আনন্দ হতো। গান-বাজনার তালে তালে আর অতিথিদের পদচারনায় মুখরিত হতো। বর্তমানে সকলেই কর্ম ব্যস্ততা থাকায় সেই ভাবে মন্ডপে ঘুরতে আসতে দেখা যায় না। এছাড়ও বর্তমানে ধর্মীয় বিষয় গুলো তেমন ভাবে মানতে দেখা যায় না।
পূজাচারি পুলক ঠাকুর বলেন, পূর্বে পূজার মন্ডপ তৈরী হতো শহর জুড়ে হাতে গোনা কয়েকটা। পুরো শহরের মানুষ সেখানে গিয়ে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করে বেশ আনন্দ করতো। এখন এক এলাকায় অনেকগুলো মন্ডপ হওয়ার কারণে মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি নষ্ট হয়েছে। ফলে আগের সেই চিরচেনা আনন্দ উৎসব লক্ষ্য করা যায় না।
এছাড়াও পূজোর কাজকর্মে এখন কাউকে অংশ গ্রহণ করতে দেখা যায়না। এসব বিষয় গুলোর উপরে যদি পারিবারিক শিক্ষা দেওয়া হয়। তাহলে একদিকে যেমন ধর্মীয় উৎসব গুলো ভালো ভাবে পালন হবে, অন্যদিকে উৎসবমূখর পরিবেশ তৈরী হবে। যা সকলকে ধর্মমূখি হতে সাহায্য করবে।